অফ পেজ এসইও কি? "অফ-পেজ এসইও" (যাকে "Off-Site SEO"ও বলা হয়) সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্টস পেজেসগুলির (SERPs) মধ্যে আপনার র্যাঙ্কিংকে প্রভাবিত করার জন্য আপনার নিজের ওয়েবসাইটের বাইরে থেকে নেওয়া পদক্ষেপগুলিকে বোঝায়। অন-পেজ এসইওর পাশাপাশি অফ পেজ এসইওর মধ্যে রয়েছে বেসিক এসইও-এর বেশ কিছু বিষয় যা একটি সাইটকে র্যাঙ্ক করতে সাহায্য করে।
অফ পেজ এসইও কি?
ওয়েবসাইটের বাইরে যেসব এসইও করা হয় তাকে অফ পেজ এসইও বলে। অন পেজ এসইও এর পাশাপাশি অফ পেজ এসইও করলে সার্চ ইঞ্জিনের কাছে ওয়েবসাইটে প্রাধান্য বৃদ্ধি পায়।
অফ পেজ এসইও কেন গুরুত্বপূর্ণ?
অন পেজ এসইও ওয়েবসাইটের জন্য সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। ভালো ভাবে অন পেজ এসইও করলে সার্চ ইঞ্জিন আপনার সাইটকে সার্চ রেজাল্টের প্রথম পেজে উঠাতে সাহায্য করে। কিন্তু অফ পেজ এসইও করলে সাইট সার্চ রেজাল্টের প্রথম দিকে চলে আসতে পারে। অতএব অফ পেজ এসইও সার্চ ইঞ্জিনের কাছে আপনার সাইটের প্রাধান্য বাড়িয়ে দেয়। একারণেই মুলত আমাদের অফ পেজ এসইও করা উচিত। এছাড়া সার্চ ইঞ্জিন বাদে অন্য কোন মাধ্যম থেকে ভিজিটর আনতে চাইলে অফ পেজ এসইও করা উচিত।
আমরা আজকে অফ পেজ এসইও এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত বিষয় গুলি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
১. ব্যাকলিংক
ব্যাকলিংক এবং অফ পেজ এসইও একে অপরের সাথে গভির ভাবে জড়িত। ব্যাকলিংক হলো একটি ওয়েবসাইটের সাথে আরেকটি ওয়েবসাইটের লিংক স্থাপন করা। বর্তমানেও ব্যাকলিংক একটি গুরুত্বপুর্ন এসইও ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে।
ব্যাক লিংক মুলত দুই প্রকার:
ডুফলো লিংক: এটি হলো ব্যাকলিংকের আসল ধরণ। ডুফলো লিংক বলতে ঐ সকল লিংককে বোঝায় যেগুলো মুল লিংকে অথোরিটি পাস করার মাধ্যমে সাহায্য করে। এই অথরিটি পাসকে link juice পাস করাও বলা হয়। এই ডুফলো লিংক ওয়েবসাইটের অথরিটি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
নোফলো লিংক: এগুলো হলো এমন লিংক যেগুলো অথরিটি পাস হয় না। ওয়েব স্প্যাম বন্ধ করার জন্যই নোফলো লিংক গুলো চালু হয়েছে। এসব লিংক এসইওতে খুব একটা প্রভাব ফেলে না।
সাম্প্রতিক সমীক্ষা অনুযায়ী যেসব ওয়েবসাইট সার্চ রেজাল্টের প্রথম দিকে অবস্থান করে তাদের ব্যাকলিংক সংখ্যা তুলনামূলক বেশী। তাই ব্যাকলিংক অনেক গুরুত্বপুর্ন একটি বিষয়। নিচে কিছু টিপস দেওয়া হলো যেগুলো অনুসরণ করলে আপনি ব্যাকলিংক বাড়াতে পারবেন।
গেস্ট ব্লগিং: ব্যাকলিংক বাড়ানোর সবথেকে সেরা পদ্ধতি হলো গেস্ট ব্লগিং। অন্যের ব্লগে পোস্ট করাকে গেস্ট ব্লগিং বলে।এর ফলে আপনি যার ব্লগে পোস্ট করছেন সে একটি কন্টেন্ট ফ্রিতে পাবে এবং বিনিময়ে আপনি একটি ব্যাকলিংক পাবেন। গেস্ট ব্লগিং করে পাওয়া ব্যাকলিংক গুলো সাধারণত অনেক মানসম্মত হয়ে থাকে।
ব্লগ কমেন্টিং: অন্যের ব্লগ পোস্টে কমেন্ট করার মাধ্যমে আপনি ব্যাকলিংক পেতে পারেন। তবে স্প্যাম সাইটে কমেন্ট করলে অথবা অতিরিক্ত কমেন্ট করার ফলে গুগল আপনার সাইটকে স্প্যাম হিসেবে ধরে নিতে পারে। ফলে র্যাংক হারাতে পারেন। তাই এই বিষয়ে সতর্ক থাকুন।
ডিরেক্টরি সাবমিশন: ডিরেক্টরি হলো এমন এক ধরনের ওয়েবসাইট যেখানে বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইট গুলোর তথ্য থাকে।
এরকম ডিরেক্টরি ওয়েবসাইট গুলোতে আপনার ওয়েবসাইট সাবমিট করে সম্পুর্ন ফ্রিতে একটি ব্যাকলিংক পেতে পারেন।
প্রশ্ন উত্তর সাইট থেকে ব্যাকলিংক: বর্তমানে অনেক জনপ্রিয় প্রশ্ন উত্তর সাইট আছে যেখানে বিভিন্ন বিষয়ে মানুষ প্রশ্ন করে। এবং এই প্রশ্নের উত্তর যেকেউ চাইলে দিতে পারে। এরকম প্রশ্ন উত্তর সাইট থেকে সহজেই ব্যাকলিংক পাওয়া সম্ভব। এর জন্য এমন একটি প্রশ্ন আপনাকে খুজতে হবে যার উত্তর আপনার সাইটে দেওয়া আছে এবং সেই প্রশ্নের উত্তরে আপনার সাইটের লিংক দিয়ে দিলেই আপনি একটি হাই কোয়ালিটি ব্যাকলিংক ফ্রিতে পেয়ে যাবেন।
২. সোশ্যাল মিডিয়া শেয়ারিং
সার্চ ইঞ্জিন ছাড়া অন্য কোনো মাধ্যমে যদি ওয়েবসাইটে প্রচুর ভিজিটর আনতে চান তাহলে সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করার মাধ্যমে তা আনতে পারেন। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রচুর মানুষ এক্টিভ থাকে। তাই খুব সহজেই সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ভিজিটর পাওয়া যায়। বড় বড় নিউজ সাইট গুলোর একাংশ ভিজিটর সোশ্যাল মিডিয়া থেকে আসে।
৩. পেইড মার্কেটিং
যে মার্কেটিং করতে গেলে টাকা খরচ করতে হয় তাকে পেইড মার্কেটিং বলে। আপনি যদি ওয়েবসাইটে খুব কম সময়ে প্রচুর ভিজিটর চান তাহলে কিছু টাকা খরচ করে পেইড মার্কেটিং করতে পারেন। গুগল এডসেন্স, ফেসবুক বিজ্ঞাপন, ইউটিউব বিজ্ঞাপন, স্পন্সর ইত্যাদির মাধ্যমে পেইড মার্কেটিং করা যায়।
৪. সোশ্যাল মিডিয়া বুকমার্কিং
বর্তমানে আরেকটি জনপ্রিয় কৌশল হলো সোশ্যাল মিডিয়া বুকমার্কিং। সোশ্যাল মিডিয়া বুকমার্কিং সেইসব ওয়েবসাইট যেখানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের ওয়েবসাইট বা ওয়েবসাইটের কোনো পেজ বুকমার্ক করে রাখে। এই ধরনের ওয়েবসাইট থেকে অনেক বেশি ট্রাফিক পাওয়া যায় এবং ডু-ফলো ব্যাকলিংক তৈরি হয়।
৫. প্রোফাইল ব্যাকলিংক (profile backlink)
প্রোফাইল ব্যাকলিংক হলো নিজের প্রোফাইলের সাহায্যে ওয়েবসাইটের ব্যাকলিংক তৈরি করা। আমাদের প্রয়োজনে এমন অনেক ওয়েবসাইটে অ্যাকাউন্ট খুলি যেখানে নিজের একটা প্রোফাইল তৈরি করার সুযোগ থাকে। এবং সেটা ইউজাররা দেখতে পায়। এরকম প্ল্যাটফর্মে যদি আপনার অ্যাকাউন্ট থাকে তাহলে সেখানে ব্যাকলিংক করতে পারেন। সেই সাইটে আপনার কার্যক্রম ভালো হলে, মানুষ আপনার প্রতি আগ্রহী হলে এবং জনপ্রিয়তা পেলে সেই ব্যাকলিংক ভিজিটর আনতে পারবেন। আর এটা আপনার সাইট বা ব্লগের জন্য ডু-ফলো ব্যাকলিংক হিসেবে কাজ করে। তাই এটা র্যাঙ্কিংয়ে বেশ ভালো সহায়তা করে।
আমাদের এই পোস্টটি যদি ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আর কোনো প্রশ্ন বা মন্তব্য থাকলে কমেন্ট করবেন।
ধন্যবাদ সবাইকে!
Comments
Post a Comment