Skip to main content

রহস্যময় উত্তর মেরু


উত্তর মেরু। বরফসমুদ্রে দিনরাতের হিসাবটা একেবারেই ভিন্ন। ৬ মাস দিনের পর আসে ৬ মাস রাত। সেখানে বসবাস করা এস্কিমো বা ইনুইট জাতির মানুষ বাড়ি বানায় বরফ দিয়ে। সে বাড়ি গলে যায় গ্রীষ্মকালে। খাবার বলতে কাঁচা মাংস, মাছ আর কিছু ঘাস। পশুর চামড়া তাদের পোশাক। সিল মাছের তেল দিয়ে ঘরের প্রদীপ জ্বালায় তারা। সময় না মানা, ভাসমান বরফে উত্তর মেরু আর এস্কিমোদের অবাক জীবন নিয়ে আজকের রকমারি—

উত্তর মেরু জয়ের ইতিহাস

উত্তর মেরু জয়ের ইতিহাস এভারেস্ট জয়ের চেয়ে কম রোমাঞ্চকর নয়। কিন্তু উত্তর মেরুতে কে প্রথম পা রাখল তা নিয়ে এখনও বিভ্রান্তি রয়েছে। আমেরিকান অভিযাত্রী ফ্রেডেরিক আলবার্ট কুক 21 এপ্রিল 1908 সালে দুই সঙ্গীর সাথে উত্তর মেরুতে প্রথম পা রাখার দাবি করেন। কিন্তু এ বিষয়ে সন্তোষজনক প্রমাণ দিতে না পারায় কুককে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি।

কিন্তু উত্তর মেরু জয়ের কৃতিত্ব যে ব্যক্তিটির, তিনি হলেন আমেরিকান নৌবাহিনীর প্রকৌশলী রবার্ট পিয়ারি। পিয়েরে 6 এপ্রিল, 1909-এ প্রথম উত্তর মেরুতে পা রাখার দাবি করেছিলেন। কিন্তু তার দাবিটিও বিতর্কিত। কারণ যদিও তার যাত্রার প্রাথমিক পর্যায়ে তার 5 জন সঙ্গী ছিল, তবে চূড়ান্ত পর্যায়ে কেউ তার সাথে ছিল না এবং উত্তর মেরুতে পৌঁছানোর জন্য তিনি যে পথ, সময় এবং গতি বলেছিলেন তা তার প্রাথমিক সঙ্গীর বক্তব্যের সাথে মেলেনি।

এইভাবে, 1989 সাল পর্যন্ত, রবার্ট পিয়েরকে উত্তর মেরু জয় করা প্রথম ব্যক্তি হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছিল। কিন্তু একই বছরে, ব্রিটিশ অভিযাত্রী ওয়ালি হারবার্ট চুলচেরা বিশ্লেষণ করে ঘোষণা করেন যে পিয়ের এবং তার দল মিথ্যা তথ্য দিয়েছিল এবং বাস্তবে কখনোই উত্তর মেরুতে পৌঁছায়নি।

তারপর 2005 সালে, আরেক ব্রিটিশ অভিযাত্রী টম অ্যাভেরি পিয়েরকে উদ্ধার করতে এগিয়ে আসেন। তিনি পিয়েরের বর্ণিত পথ ধরে একটি কুকুরের স্লেজ নিয়েছিলেন এবং 36 দিন এবং 22 ঘন্টা পরে উত্তর মেরুতে পৌঁছেছিলেন। এই সময়টি পিয়েরের বর্ণিত সময়ের চেয়ে 5 ঘন্টা কম। তাই অ্যাভেরি ঘোষণা করেছিলেন যে রবার্ট পিয়ারি আধুনিক ন্যাভিগেশনের সাহায্য ছাড়াই সত্যিকারের উত্তর মেরুর সবচেয়ে কাছাকাছি এসেছিলেন এবং তিনিই প্রথম উত্তর মেরু জয় করেছিলেন।

৬ মাস দিন ৬ মাস রাত

পৃথিবীর সবচেয়ে উত্তরতম বিন্দু উত্তর মেরু। আর্কটিক বরফ অঞ্চল। পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধের এই বিন্দুতে এর ঘূর্ণন অক্ষ পৃষ্ঠতলের সঙ্গে মিলেছে। বরফের স্রোত কখনই স্থির রাখে না উত্তর মেরুকে। বরফের ওপর উত্তর মেরুর বিন্দুটি নির্দেশ করলেও, এর নিচে কোনো মাটি নেই। রয়েছে সমুদ্র। এ ছাড়া কৌণিক অবস্থানের কারণে অন্তত দুটি উত্তর মেরু ধরে হিসাব করা হয়। একটিকে বলা হয় নর্থ পোল অন্যটিকে ডিপ নর্থ পোল। এ ছাড়া উত্তর মেরু বলতে অনেকে আবার উত্তর চৌম্বক মেরুর সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেন। আর্কটিক মহাসাগরের বুকের মাঝখানে এই উত্তর মেরু ভয়ঙ্কর ঠাণ্ডায় জমে থাকে সারা বছর। পৃথিবীর ৯০ ডিগ্রি অক্ষাংশ উত্তর মেরু, তাই একেবারেই ভিন্ন পরিবেশ এখানে। পৃথিবীর অন্য দেশগুলোয় বছরজুড়ে দিনরাতের যে হিসাব তার কিছুই নেই এখানে। এখানে গ্রীষ্মকাল আর শীতকাল ছাড়া আর কোনো প্রধান ঋতু নেই। উত্তর মেরুতে গ্রীষ্মকাল থাকে ১৮৭ দিন। এ সময় ২৪ ঘণ্টাই সূর্য থাকে আকাশে। এ সময় দিন থাকে একটানা। শীতকালের ব্যাপ্তি ১৭৮ দিন। এ সময় একটানা রাত থাকে এখানে।

নেই কোনো টাইমজোন -  রহস্যময় উত্তর মেরু

অবিশ্বাস্য শোনালেও এটা সত্যি যে, উত্তর মেরুতে কোনো ঘড়ির সময় ধরা হয় না। নির্দিষ্ট টাইমজোন না থাকায় এমনটি ঘটে। সময় বোঝাতে তাই পছন্দমতো একটি টাইমজোন ধরে নিতে হয়। যারাই এই বিন্দুতে পৌঁছান তারা তাদের দেশ বা যেখান থেকে এসেছেন সে স্থানের সময় ধরে উত্তর মেরুর সময় নির্ধারণ করে নেন।

কেন এমন হয়? সহজ করে বললে, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সময় নির্ধারণের জন্য যে অক্ষাংশ মেনে হিসাব করা হয় তার কেন্দ্রবিন্দু উত্তর মেরুতে। পৃথিবী ঘূর্ণন, কৌণিক অবস্থান মাটির সঙ্গে ঠিক ৯০ ডিগ্রি ধরা হয় এখানে। এই কৌণিক অবস্থানের কারণে উত্তর মেরুতে দিনরাতের হিসাবে প্রায় ৬ মাস টানা দিন আর রাত হয়। বছরে একবার সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত হয় এখানে। সময় নির্ধারণের জন্য ঘড়ির কাজ এখানে অকেজো। স্বাভাবিকভাবে সন্ধ্যার পর সূর্য অস্ত যাওয়ার কথা হলেও উত্তর মেরুতে সূর্য ডোবে না। তবে কখনই মাথার ওপরে সূর্য পৌঁছয় না।

গ্রীষ্মকালের টানা প্রায় ৬ মাসের দিন শেষে যখন শীতকাল আসে তখন উল্টো ঘটনা ঘটে। প্রায় ৬ মাস সূর্যের দেখা পাওয়া যায় না। এসময় উত্তর মেরু ঢেকে থাকে আঁধারে। রাতে কখনো কখনো হালকা আভা দেখা গেলেও রাত কাটে না প্রায় ৬ মাস। এ সময় মাইনাস ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায়, ভয়াবহ ঠাণ্ডায় ডুবে থাকে উত্তর মেরু।

ওপরে বরফ নিচে সমুদ্র-  রহস্যময় উত্তর মেরু

আর্কটিক, বরফের সমুদ্র। মহাসমুদ্রের বুকে গেঁথে আছে উত্তর মেরু। ওপরে পুরু বরফের আস্তরণ। আর নিচে ছুটছে বিশাল সাগর। সেখানে মাছগুলো দিব্যি বেঁচে আছে। সেই সমুদ্রে আছে সামুদ্রিক উদ্ভিদ ও প্রাণীরাও। বিমান দিয়ে দিনের পর দিন উড়ে গেলেও বরফসমুদ্রের সীমানা পাওয়া যায় না। উত্তর মেরুর এই বরফসমুদ্রের কোথাও কোথাও ভাসমান বরফের ছোট-বড় দ্বীপ দেখা যায়। যে বরফদ্বীপগুলো ঠায় দাঁড়িয়ে আছে, সেগুলোকে বলা হয় আইসবার্গ। আর যে বরফদ্বীপগুলো ক্রমাগত ভেসে চলেছে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায়, তাদের বলা হয় আইস সেলভ। এই বরফের দ্বীপগুলোর কোনোটা কোনোটা এতটাই বিশাল যে, দূর থেকে দেখে পাহাড় ভেবে বসতে পারেন।

এই বরফ বেশ পরিচ্ছন্ন। বিশুদ্ধ পানি হলেও এ পানি ভয়াবহ লবণাক্ত। এখানকার বরফের বিছানা কোনো কোনো জায়গায় ১.৬ কিলোমিটার পর্যন্ত গভীর। পৃথিবীর মোট বরফের ৯০ শতাংশই এখানে জমাট বেঁধে আছে। বিস্ময় জাগতে পারে, পৃথিবীর অন্তত ৭০ শতাংশ পরিষ্কার পানি এখানে বরফ হয়ে জমে রয়েছে। এই বরফে কতটুকু পানি জমে আছে অনুমান করতে পারছেন? ছোট একটি ধারণা দেওয়া যাক, এই বরফের সমুদ্রে জমাট বেঁধে থাকা বরফ যদি গলে যায় তাহলে সমুদ্রের উচ্চতা বেড়ে দাঁড়াবে অন্তত ২০০ ফুট। প্রায় ২০ তলা উচু বিল্ডিংয়ের সমান!

সর্বোচ্চ তাপমাত্রা শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস - রহস্যময় উত্তর মেরু

আর্কটিকের বরফের ছোট-বড় দ্বীপগুলো ভেসে চলে গ্রীষ্মে। আর শীতে এসে জমে দাঁড়িয়ে যায়। দুই ঋতুর উত্তর মেরুতে প্রায় ৬ মাসের গরম আর ঠাণ্ডা আবহাওয়া বলা হলেও, এখানকার গরমতম দিনেও তাপমাত্রা থাকে শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস। বরফ জমে থাকা এই গ্রীষ্মের দিনে ৬ মাস সূর্যের দেখা পাওয়া যায়। শীতকাল এলে রাতের আঁধার নেমে আসে ৬ মাসের জন্য। যদিও ঠিক হিসাবটি ভিন্ন। শীতকাল থাকছে ৯ মাস আর বাকি ৩ মাস গ্রীষ্মকাল।

গ্রীষ্ম কি শীত, সব সময়ই অবিশ্বাস্য ঠাণ্ডায় মোড়ানো থাকে উত্তর মেরু। শীতকালে তাপমাত্রা মাইনাস ১৫ থেকে শুরু করে মাইনাস ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নেমে যায়। গবেষকরা দীর্ঘদিন ধরেই সে সময়ের পরিবেশের চিত্র তুলে আনার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু বিরূপ আবহাওয়া সব প্রচেষ্টাকেই বাধাগ্রস্ত করেছে। শীতকালে তুষারঝড়ের কবলে উত্তর মেরুর পরিবেশ আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে।

গ্রীষ্ম ও শীত ছাড়াও আরও দুটি ঋতু উত্তর মেরুতে খুঁজে পেয়েছেন গবেষকরা। শরত্ ও বসন্ত। তবে এই দুটি ঋতুর ব্যাপ্তিকাল কয়েক সপ্তাহ মাত্র। শীতকালে আকাশ থাকে পরিষ্কার। সমুদ্র বরফ হয়ে জমে আছে, তাই বাষ্প নেই, নেই মেঘ, নেই বৃষ্টি। গ্রীষ্ম আসার আগে তুষারঝড় বয়ে যায় উত্তর মেরুতে। শীতে উত্তর মেরুতে যতটা না ঠাণ্ডা, তারচেয়ে বেশি ঠাণ্ডা পড়ে আশপাশের এলাকায় (সাইবেরিয়ায়)।

রাশিয়ার দখলে উত্তর মেরু

সমুদ্র আইনে উত্তর মেরুর দখল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, নরওয়ে, ডেনমার্ক ও রাশিয়া বরাবরই সোচ্চার। সবাই দাবি করে, উত্তর মেরু তাদের। উত্তর মেরু পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্ তেলের খনি হওয়ায় এর দিকে নজর সবারই। উত্তর মেরুতে কেউই ছাড় দিতে রাজি নয়। যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া উত্তর মেরুতে নিজেদের দাবি করে সেনা শক্তি প্রয়োগে ব্যস্ত। কার্যত তাদের টানাপড়েনে অন্য দেশগুলো উত্তর মেরুর দখল নিয়ে চুপচাপ রয়েছে। নিজ দেশের সীমানা থেকে ২০০ মাইল পর্যন্ত সমুদ্রসীমা দখলে রাখতে মরিয়া হলেও রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র উত্তর মেরুতে নিজেদের করে রাখতে চায়। উত্তর মেরুর দখল নিয়ে তাই বিরোধ বহু পুরনো। কিন্তু ইতিহাস বলছে, উত্তর মেরু আবিষ্কারের পর থেকে কেউই এখানে দখলের ইতিহাস বুনতে পারেনি। গত কয়েক দশকে সামরিক শক্তিধর দুই দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া উত্তর মেরুতে সেনা পাঠিয়ে দখলের ইঙ্গিত দেয়। আধুনিক যুদ্ধজাহাজের আদলে তৈরি এই জাহাজগুলো বরফের ওপর দিয়ে চলতে পারে। রাশিয়া সেনা পাঠিয়ে উত্তর মেরু নিজেদের করে নেওয়ার প্রচেষ্টায় আপাতত সবচেয়ে সফল। রাশিয়া তাদের পতাকা তুলেছে এই অঞ্চলে। কিন্তু এখানে বসতি নেই জনমানুষের। এস্কিমো বা ইনুইট জাতির মানুষ কানাডা, গ্রিনল্যান্ড ও রাশিয়ার দিক থেকে উত্তর মেরুতে বসবাস করে। তাদের কোনো দেশ নেই।

এস্কিমোদের শিকারি জীবন

এস্কিমোদের শিকারি জীবন - রহস্যময় উত্তর মেরু

উত্তর মেরুতে বসবাস এস্কিমো বা ইনুইট জাতির। প্রচণ্ড ঠাণ্ডার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অবাক জীবন বেছে নিয়েছে তারা। উত্তর মেরু বরফে ঢাকা। অনুর্বর মাটিতে কোনো ফসল নেই। বরফ গলিয়ে খাবার পানি সংগ্রহ করে তারা। উত্তর মেরুতে অবিশ্বাস্যভাবে বেঁচে থাকা পশু শিকার করে তারা খাবার জোগাড় করে। এখানে রয়েছে আর্কটিক অঞ্চলের ভল্লুক, বল্গা হরিণ, খরগোশ, পাখি, ভেড়া, শিয়াল আর কুকুর। কখনো দেখা যায় রাজাহাঁস। আরও আছে সিল মাছ। ইনুইট জাতির খাবার এগুলোই। শিকার করতে তারা ব্যবহার করে পশুর দাঁত। বর্শা ও তীর বানিয়ে তারা পশু শিকার করে। সেই পশুর চামড়া তারা গায়ে দেয়। তেল গলিয়ে আগুন জ্বালায়। কখনো রান্নাও করে। তাদের তৈরি বর্শায় ফলা থাকে তিনটি। মাছের ও শিকার করা পশুর ধারালো দাঁত দিয়ে তারা এই বর্শা তৈরি করে। তিনটি তীরের একটি শিকারের গায়ে বিঁধে, অন্য দুটি ব্যবহূত হয় শিকার যেন পালিয়ে যেতে না পারে। এস্কিমোদের কখনো কখনো হিংস্র পশুর সামনাসামনি শিকার করতে হয়। পশুরাও উল্টো আক্রমণ করে বসে। তাই এস্কিমোরা গায়ে পশুর মোটা চামড়ার পোশাক পরে নেয়। শতাব্দীকাল ধরে এই যাযাবর, শিকারি জীবনই টিকিয়ে রেখেছে তাদের। উত্তর মেরু ঘেঁষা কানাডা, গ্রিনল্যান্ড, রাশিয়া, ডেনমার্ক ও যুক্তরাষ্ট্রের দিকে সব মিলিয়ে মাত্র দেড় লাখ ইনুইট জাতির বসবাস রয়েছে।

বরফের সমুদ্রে এখন চলে জাহাজ -  রহস্যময় উত্তর মেরু

আমেরিকান অভিযাত্রী ফ্রেডেরিক আলবার্ট কুক তার দুই সহযাত্রী নিয়ে ২১ এপ্রিল ১৯০৮ সালে সর্বপ্রথম উত্তর মেরুতে পা রাখেন বলে দাবি করেন। কিন্তু প্রমাণের অভাবে তাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। অবশ্য উত্তর মেরু জয়ের কৃতিত্ব যাকে দেওয়া হয় তিনি হলেন আমেরিকান নেভি ইঞ্জিনিয়ার রবার্ট পিয়েরি। পিয়েরি দাবি করেন তিনি ১৯০৯ সালের ৬ এপ্রিল সর্বপ্রথম উত্তর মেরুতে পা রাখেন। তার দাবিও বিতর্কের মুখে পড়ে, কারণ তার যাত্রাপথের প্রাথমিক পর্যায়ে ৫ জন সহযাত্রী থাকলেও চূড়ান্ত পর্যায়ে তার সঙ্গে কেউ ছিল না। যদিও ১৯৮৯ পর্যন্ত রবার্ট পিয়েরিকেই সর্বপ্রথম উত্তর মেরু জয়ী ধরা হয়। কিন্তু ব্রিটিশ অভিযাত্রী ওয়ালি হার্বার্ট ঘোষণা করেন যে, পিয়েরি আর তার দলবল আসলে ভুল তথ্য দিয়েছেন এবং তারা প্রকৃতপক্ষে উত্তর মেরু পৌঁছাননি। এরপর ২০০৫ সালে আরেক ব্রিটিশ অভিযাত্রী টম এভারি পিয়েরির বর্ণনা অনুযায়ী রুটে কুকুরবাহী স্লেজে চড়ে যাত্রা শুরু করেন এবং ৩৬ দিন ২২ ঘণ্টা পর তিনি উত্তর মেরু পৌঁছান। এই সময় পিয়েরির বর্ণনাকৃত সময় অপেক্ষা ৫ ঘণ্টা কম। কাজেই এভারি ঘোষণা করেন যে, রবার্ট পিয়েরি আধুনিক দিকনির্দেশনা যন্ত্র ছাড়াই প্রকৃত উত্তর মেরুতে না পৌঁছতে পারলেও এর সবচেয়ে কাছাকাছি গিয়েছিলেন। তিনিই প্রথম উত্তর মেরু জয়ী। এখন উত্তর মেরুতে প্রায়ই বিজ্ঞানীরা নানা গবেষণার কাজে পৌঁছান। আমেরিকা ও রাশিয়া বড় আকারে অভিযান করেছে উত্তর মেরুতে। আধুনিক জাহাজগুলো বরফ কেটে দিব্যি পৌঁছে যায় উত্তর মেরুতে।

কুকুর টানে গাড়ি

কুকুর টানে গাড়ি -  রহস্যময় উত্তর মেরু

উত্তর গোলার্ধের উত্তর আলাস্কা, কানাডা এবং সাইবেরিয়ায় অবস্থিত আর্কটিক তুন্দ্রা। ইনুইট জাতির বসবাস এখানে। বরফে ঢাকা পুরো অঞ্চল। মাটি বলে কিছু নেই। বরফের নিচে বইছে সমুদ্র। সারা বছরই এই অঞ্চল ঢাকা থাকে বরফে। তাই চলাচল খুবই বিপজ্জনক। এই বরফ এলাকায় এখনো যোগাযোগের অন্যতম বাহন হলো নৌকা এবং কুকুরের গাড়ি বা স্লেজ। এ গাড়িকে তারা বলে কামুতিক। কুকুরের গাড়ি, এমন এক ধরনের গাড়ি যা বরফের ওপর দিয়ে টেনে নিলেই চলে। ইঞ্জিনের এই যুগে, মোটরগাড়ি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে রাজপথে। সেখানে স্লেজ গাড়ি, কোনো তেল লাগে না, গ্যাস লাগে না। এর কোনো ইঞ্জিন নেই। এমনকি নেই কোনো চাকা। পশুর চামড়া, শক্ত হাড়— এসব সাধারণ জিনিস দিয়েই তারা তৈরি করে একেকটি গাড়ি। এই গাড়িকে জুড়ে দেয় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুরের গলায়। আমাদের দেশের ঘোড়ার গাড়ির মতো তারা কুকুরের গাড়িতে চড়ে ঘুরে বেড়ায় বরফের দেশে। তাদের এই কুকুর কিন্তু যে সে কুকুর নয়। কুকুরগুলোা বেশ শক্তিশালী। সাধারণ কুকুরের চেয়ে অনেক বেশি ঘন এবং পুরু এদের গায়ের লোম। নিজেদের প্রয়োজনে ইনুইটরা বাড়িতে এই কুকুর পোষে। এরা নদীতে শিকারে যায় ছোট নৌকায় চড়ে। নাম কায়াক। মালামাল পরিবহন, লোক আনানেওয়া এবং অন্যান্য জিনিসপত্র পরিবহনের সময় এরা বড় নৌকা ব্যবহার করে, যাকে ‘উমিয়াক’ বলে। উমিয়াক লম্বায় প্রায় ছয় থেকে ১২ মিটার। বিশেষ এই নৌকার তলদেশ সমান। ফলে নদীতীরের খুব কাছাকাছি ভিড়তে পারে সহজেই।

বরফের বাড়ি ইগলু

বরফের বাড়ি ইগলু-  রহস্যময় উত্তর মেরু

উত্তর মেরুতে জীবন অনেক কঠিন। গাছপালা না থাকায় নেই কাঠ। যে সামান্য পরিমাণ কাঠ এস্কিমো বা ইনুইটরা জোগাড় করে সেসব জ্বালানি হিসেবেই কাজে লাগায়। বাড়ি বানাতে যে কাঠের দরকার তা আর জোগাড় হয় না। তাই বাধ্য হয়ে বরফই হলো তাদের বাড়ি তৈরির জন্য সবচেয়ে ভালো উপাদান। প্রচণ্ড শীতে শক্ত বরফের খণ্ড দিয়ে তারা তৈরি করে বিশেষ এক ধরনের ঘর। একে বলা হয় ‘ইগলু’। ছোট ছোট ফাঁক-ফোকরে ছোট ছোট বরফের টুকরা ঢুকিয়ে তৈরি করা হয় এই বাড়ি। টুকরাগুলো টালির ফাঁকে ফাঁকে জমে হাওয়া ঢোকার পথ দেয় বন্ধ করে। আর জানালা তৈরি করে এক খণ্ড স্বচ্ছ বরফের টুকরা দিয়ে। ইগলুতে ঢুকতে হয় হামাগুড়ি দিয়ে। চার-পাঁচ হাত লম্বা একটা সুড়ঙ্গপথ পেরিয়ে তবেই পাওয়া যায় ইগলুর দরজা। সাধারণত ইগলুর উচ্চতা পাঁচ থেকে ছয় ফুট। বাড়ির ভিতর সবসময় জ্বলতে থাকে পাথরের তৈরি প্রদীপ। প্রদীপের সলতে তৈরি করা হয় সমুদ্রের শেওলা দিয়ে। আর প্রদীপ জ্বলে সিলের তেলে। বরফের বাড়ির ভিতরে ইনুইটদের মেলে কিছুটা উষ্ণতা আর হিংস্র প্রাণীদের আক্রমণ থেকে নিরাপত্তা। ভয়ঙ্কর তুষারঝড়ে এই বাড়ি তাদের প্রাণ বাঁচায়। অবশ্য বছরের অর্ধেক সময় পেরোতে না পেরোতে এই বাড়ি গলে যায়। গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লে বরফ গলে নদীতে চলে যায় ইগলু বাড়ি। তখন তাদের বাইরে খোলা মাঠে তাঁবু টানিয়ে বসবাস করা ছাড়া কোনো উপায় থাকে না। যেনতেনভাবে তৈরি একটা ফ্রেমের ওপর পশুর চামড়া দিয়ে ঢেকে তারা তৈরি করে এই তাঁবু। ইনুইট জাতির মানুষের মধ্যে বিশ্বাস আর সম্পর্কের মেলবন্ধন তাদের কঠিন দিনগুলো পেরিয়ে যেতে সাহায্য করে। কয়েকটি পরিবার মিলে ছোট ছোট তাঁবু বানিয়ে বছরের বাকি অর্ধেক সময় পার করে দেয়। তাদের মধ্যে পারিবারিক শ্রদ্ধাবোধ দারুণ। একে অন্যের সঙ্গে কখনোই ঝগড়া করে না। মতবিরোধ হলে বয়স্কজনের সিদ্ধান্ত মেনে চলে তারা। তারা সহজ, সরল, কর্মঠ। ধর্ম বিশ্বাস প্রবল।অপরাধ ভাবনা করাও তাদের জন্য ভয়াবহ পাপ। প্রকৃতি ও পশু-প্রাণীদের প্রতি তারা শ্রদ্ধাশীল। কুসংস্কারে আচ্ছন্ন ইনুইট জাতির মানুষ বাইরের দুনিয়া সম্পর্কে খুব একটা জানে না।

খাবার কাঁচা মাংস আর মাছ -  রহস্যময় উত্তর মেরু

বরফে ঢাকা উত্তর মেরুতে কোনো গাছ নেই, তাই শিকার করেই খাবার জোগাড় করতে হয় তাদের। সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী তিমি, সিল, পেঙ্গুইন, পাখি, পাখির ডিম, বরফ অঞ্চলের খরগোশ, মেরু ভল্লুক, মাছ তাদের প্রধান খাবার। সামুদ্রিক উদ্ভিদ, হার্ব জাতীয় ঘাস, ঘাসের শিকড়, বেরি জাতীয় ফল দূর থেকে সংগ্রহ করে তারা। পশু আর মাছের তেল ব্যবহার করে আগুন জ্বালায়। হিংস্র প্রাণী তীর, বর্শা দিয়ে শিকার করে। তিমি ও সিল শিকারে তারা সিদ্ধহস্ত। এস্কিমোরা শীতের সময় খাওয়ার জন্য খাবার সংরক্ষণ করে। গ্রীষ্মকালে মাছ ও মাংস শুকিয়ে নেয়। এসময় তারা থাকে চামড়ার তৈরি ‘টুপিক’ নামক তাঁবুতে। সাদা বরফে ঢাকা নদীর বুকে ওতপেতে অপেক্ষা করে একটি গর্তের কাছে। এই গর্ত থেকে মুখ বের করে শ্বাস-প্রশ্বাস নেয় সিল, তখনই তারা সেটাকে শিকার করে। এই কৌশল সেখানকার শ্বেত ভল্লুকরাও অবলম্বন করে। এ ছাড়া তারা শিকার করে ওলরুস, ক্যারিব্যু। এসব প্রাণীর মাংস তারা কখনো সিদ্ধ করে আবার কখনোবা কাঁচাই খেয়ে থাকে। প্রচণ্ড ঠাণ্ডা থাকায় তারা দীর্ঘদিন খাবার সঞ্চয় করে রাখতে পারে। উত্তর মেরুতে খাবারের ভয়াবহ সংকট। বরফের নিচে থাকা মাছ ধরে সাময়িক ক্ষুধা মেটালেও দিন দিন তাদের খাবার সংকট চরম আকার ধারণ করছে। ঘাস জাতীয় খাবার চিবিয়ে তারা কাটিয়ে দেয় দিনের পর দিন। সারা পৃথিবীর মানুষ যখন ফ্যাট জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলছে, তখন ইনুইট জাতির মানুষের প্রাণ বাঁচিয়ে রেখেছে ফ্যাট জাতীয় খাবার, কাঁচা মাংস— যা এক বিস্ময়। তারা কখনো একা খাবার খায় না। যে বা যারাই শিকার বা খাবার জোগাড় করে সবাই ভাগ করে খায়। বরফ গলিয়ে পানি নয়তো সিলের গরম রক্ত— আর কিছু নেই পানীয় বলতে।

গলছে বরফ, ডুববে পৃথিবী -  রহস্যময় উত্তর মেরু

সমুদ্রের উচ্চতা যদি অন্তত ১০ তলা উঁচু হয় তবে কী হবে? বিগত কয়েক বছরে আঘাত হানা সুনামি দেখে হলিউড সিনেমায় দেখানো দৃশ্য খুব অবাস্তব মনে হবে না আর। বৈশ্বিক উষ্ণতার প্রভাবে অবিশ্বাস্য গতিতে গলছে আর্কটিক অঞ্চলের বরফ। স্রেফ গলে গিয়ে সমুদ্রে নামছে এই বরফ সমুদ্রের পানি। মাত্র এক দশকের ব্যবধানে উত্তর মেরুর বরফ গলে যাওয়ার চিত্র সাধারণ মানুষকেও আতঙ্কিত করবে। বাংলাদেশের মতো সমুদ্র উপকূলতবর্তী দেশগুলো রয়েছে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কঠিন ফলাফল ভোগের জন্য। বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ঝুঁকির মুখে পড়া আর্কটিক সংক্রান্ত গবেষণা শেষে গবেষকরা জানাচ্ছেন, মানুষের সৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তন আর্কটিককে উষ্ণতর ও আরও গতিশীল স্থান হিসেবে তৈরি করছে। এর প্রতিক্রিয়ায় গত এক দশকের তুলনায় দ্রুততর গরম হয়ে ইতিহাসের যে কোনো সময়ের চেয়ে দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে অঞ্চলটি।

২০১৭ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনটিতে জানানো হয়, শীতকালীন সর্বাধিক সামুদ্রিক বরফ এলাকার পরিমাপ সর্বনিম্ন পর্যায়ে চলে গেছে। প্রতি বছর পাতলা হয়ে চার বছরের বেশি পুরনো সাগর বরফও অদৃশ্য হয়ে গেছে। গ্রামগুলো বরফগলা পানিতে ধুয়ে যাচ্ছে। গবেষণা কর্মসূচির পরিচালক ড. জেরেমি ম্যাথিস বলেন, অঞ্চলটি ফ্রিজ হিসেবে কাজ করে পৃথিবীর চমৎকার সেবা করেছে। আর এখনকার অবস্থা এমন যে, ফ্রিজটির দরজা খোলা বাকি আছে।

Comments

Popular posts from this blog

সোশ্যাল মিডিয়ার সুবিধা এবং অসুবিধা/সোশ্যাল মিডিয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

সমসাময়িক জীবনে ব্যক্তিগত যোগাযোগের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ - একটি অনিবার্য উপাদান, বিশেষ করে যারা ব্যস্ত জীবন যাপন করেন এবং তথ্য আপডেটের জন্য এটির উপর নির্ভরশীল। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে লোকেরা বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ করতে পারে, পরিবারের সাথে কথা বলতে পারে এবং অসংখ্য প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী সমস্ত ঘটনা সম্পর্কে আপডেট থাকতে পারে। সবচেয়ে সাধারণ অনলাইন ক্রিয়াকলাপগুলির মধ্যে একটি হল সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করা। একটি সমীক্ষা অনুসারে ২০২১ সালে প্রায় ৮২% আমেরিকানদের এক বা একাধিক সামাজিক নেটওয়ার্কিং সাইটে একটি প্রোফাইল ছিল, যা আগের বছরের ব্যবহারের হার থেকে ২% বেশি। ২০২০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ২২৩ মিলিয়ন মানুষ সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করত। সোশ্যাল মিডিয়ার সুবিধা/সোশ্যাল মিডিয়ার ভালো দিক কানেক্টিভিটি কানেক্টিভিটি সোশ্যাল মিডিয়ার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সুবিধাগুলির মধ্যে একটি। এটি যেকোনো সময়, সর্বত্র অগণিত ব্যবহারকারীকে লিঙ্ক করতে পারে। সোশ্যাল মিডিয়া এবং এর সংযোগের মাধ্যমে তথ্য বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে, যা মানুষের একে অপরের সাথে যোগাযোগ করা সহজ...

কিওয়ার্ড কি, কত প্রকার, কিওয়ার্ড রিসার্চ কিভাবে করে ?

অনলাইন ক্ষেত্রে কিওয়ার্ড (keyword) বিশাল একটা জিনিস কারন একটা সামান্য keyword আপনার জীবন কল্পনাহীন পরিবর্তন করে দিতে পারে যদি আপনি ঠিকঠাক ভাবে খুঁজে পান। সুতরাং সবাই চায় সঠিক এবং ভালো কিওয়ার্ড নিয়ে কাজ করতে । আমাদের, keyword নিয়ে বিস্তারিত যেমন – কিওয়ার্ড কি, কিওয়ার্ড কত প্রকার, কিওয়ার্ড রিসার্চ কিভাবে করে, কিওয়ার্ড স্টাফিং কি জেনে নেওয়াটা অনেক বেশি জরুরি সাথে জেনে নেওয়া দরকার কিওয়ার্ড রিসার্চ কিভাবে করে, কিওয়ার্ড রিসার্চ কেন এত গুরুত্বপূর্ণ এবং ভালো বাংলা কিওয়ার্ড রিসার্চ টুল কোণগুলো। কিওয়ার্ড-keyword-কি-কত-প্রকার-কিওয়ার্ড-রিসার্চ-কিভাবে-করে সূচিপত্র 1 কিওয়ার্ড(keyword)কি 2 কিওয়ার্ড কত প্রকার(types of keywords) 2.1 ক. অভিপ্রায় ভিত্তিক প্রকার (Based On Keyword Intend ) – 2.1.1 ১. মার্কেটিং কিওয়ার্ড(marketing) 2.1.2 ২. ব্রান্ড বেসড কিওয়ার্ড (brand) 2.1.3 ৩. লোকেশন বেসড কিওয়ার্ড (geo-targeting) 2.1.4 ৫. কম্পিটিশন বেসড কিওয়ার্ড(competitor) 2.1.5 ৬. কাস্টমার বেসড কিওয়ার্ড (customer centric) 2.2 খ. কিওয়ার্ড দৈর্ঘ্য নির্ভর ভাগ (based on length) 2.2.1 ১. Short-tail keyword ...

প্রসেসর কি? প্রসেসর কিভাবে কাজ করে?

প্রসেসর কম্পিউটারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমরা এটাকে CPU বা সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট বলে জানি। কম্পিউটারের এই অংশটি মূলত আমাদের কমান্ড প্রসেস করে এবং আউটপুট দেয়। প্রসেসরকে বলা হয় কম্পিউটারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কারণ প্রসেসিং ইউনিট ছাড়া আমরা কম্পিউটারের কোনো ধরনের কাজ করতে পারি না। আজ আমরা এই ব্লগ পোস্টে জানবো প্রসেসর কি, কিভাবে কাজ করে, এর গঠন কি এবং প্রসেসর কি কি। তো চলুন শুরু করা যাক আমাদের আজকের ব্লগ পোস্ট। আশা করি এই ব্লগ পোস্টটি পড়ার পর আপনি প্রসেসর সম্পর্কে আপনার সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন। প্রসেসর কি? প্রসেসর হল আমাদের ফোন বা ল্যাপটপে এক ধরনের বিশেষ হার্ডওয়্যার যা আমাদের নির্দেশ বা ইনপুট গ্রহণ করে এবং আমাদের ডিসপ্লের সামনে আউটপুট হিসেবে প্রদর্শন করে। সহজ ভাষায় যিনি প্রসেস করেন তিনি প্রসেসর। অর্থাৎ, আমাদের নির্দেশগুলি প্রসেস করে ভিজ্যুয়াল আকারে আমাদের কাছে আনা হয়। কম্পিউটার বা মোবাইল ফোনের মতো ইলেকট্রনিক ডিভাইসে প্রসেসর ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। প্রসেসর ছাড়া এই দুটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস একেবারেই অচল। প্রসেসর হল এক প্রকার গাণিতিক ইঞ্জিন। কারণ এটি একটি স্বয়ংসম্পূ...